আপোসহীনতার প্রবাদপুরুষ

হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর স্বতন্ত্র চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সন্ধান করলে সবার আগে তাঁর যে গুণটি পরিস্ফুট হয়ে ওঠে তা হলো ন্যায়ের প্রশ্নে তাঁর আপোসহীনতা।
তিনি যে কোনো সময় যে কারো কোনো ত্রুটি দেখলে সমালোচনার কোনো পরোয়া না করে তৎক্ষণাৎ সংশোধন করে দেন।
ফলে এরপর কখনো সংশোধিত ব্যক্তি পুনর্বার উক্ত ভুলের সম্মুখীন হতে লাগলেই হযরতের স্নেহমাখা কণ্ঠ তার কানে প্রতিধ্বনিত হয়।
এ ব্যাপারে হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর ভাষ্য হলো, সমালোচনার ভয়ে সবাই যদি গা-বাঁচিয়ে চলে তাহলে মানুষের ন্যায়-অন্যায় চেনার জায়গাই থাকবে না।
এজন্য কিছু লোককে সব সময় ন্যায়ের ব্যাপারে সরব থাকতে হবে, যাতে মানুষ সত্যের দিশা পেতে পারে।
হযরতের আপোসহীনতার এই গুণটি সম্পর্কে তাঁর সুযোগ্য ছাত্র মাওলানা শফীক সালমান কাশিয়ানী একটি বিস্ময়কর ঘটনা শুনিয়েছেন।
বিগত বছর একবার হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. তাঁর শ্বশুরালয়ে মাসনা মাদরাসার শূরার মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করেন।
মাশওয়ারা মাগরিবের পর শুরু হয়ে এশার সময় সমাপ্ত হয়।
ইতোমধ্যে সংবাদ আসে, হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর সম্বন্ধী হাফেজ ইসহাক সাহেব ইন্তেকাল করেছেন।
জানাযার সময় নির্ধারিত হলো পরদিন বা’দ ফজর। অথচ পরদিন বা’দ ফজর যশোর রেলগেট মসজিদে হযরত মুফতী সাহেব দা.বা. এর প্রোগ্রাম পূর্ব থেকেই নির্ধারিত ছিলো।
তাই তিনি এই প্রোগ্রামের ওয়াদা রক্ষার্থে কোনো সমালোচনার তোয়াক্কা না করে একনজর লাশ দেখেই চলে আসেন।
মূলত এ জানাযায় শরীক হলে পূর্বনির্ধারিত প্রোগ্রামটিতে অংশগ্রহণকারী শ্রোতাদের কাছে তিনি প্রতিশ্রুতি ভঙ্গের দোষে দুষ্ট হতেন।
এদিকে আত্মীয়তা রক্ষা করতে গেলে ওদিকে আলেমসমাজের মর্যাদাক্ষুণ্য হতো।
এ ধরনের বড় বড় ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য তিনি শ্বশুরালয়ে সম্বন্ধীর জানাযা রেখেই চলে এসেছিলেন।
এমনকি কোনো সমালোচনা কিংবা মনোমালিন্যের পরোয়াই করেননি।
উপরন্তু এ প্রসঙ্গে মাওলানা কাশিয়ানীর কথার জবাবে বলেছিলেন, “শরী‘আত কিছু উসূলের নাম।
আবেগের নাম শরী‘আত নয়।”

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন